বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

অভিশংসন না ১৪তম সংশোধনী?

স্বদেশ ডেস্ক: সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অভিশংসনে দণ্ডিত করা না গেলে এর বিকল্প নিয়ে ভাবছেন ডেমোক্রেট আইনপ্রণেতারা। আর এক্ষেত্রে সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীকে ব্যবহার করার চিন্তা ভাবনা চলছে।
ডেমোক্রেটের পক্ষে এনিয়ে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের সাথে ভেতরে ভেতরে একটি সমঝোতার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় হয়তো রিপাবলিকানের সমর্থন আদায় করা সম্ভব হতে পারে। সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে বলা হয়েছে কোন ব্যক্তি সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র বা সরকারের বিরুদ্ধে সংহিসতায় অভিযুক্ত হলে তিনি সরকারের কোন দায়িত্ব পালনে স্থায়ী ভাবে নিষিদ্ধ হবেন। তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যাতে একটি নিষিদ্ধকরণ প্রস্তাব সিনেটে পাশ করা যায় নিয়ে চেষ্টা চলছে। দ্য হিল ডট কম এ খবর দিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নিয়ে অযথা সময় নষ্ট করতে রাজি নয়। এর পরিবর্তে তাঁর প্রশাসনের জরুরি কাজ সমূহ সেরে ফেলতে অধিক আগ্রহী বাইডেন। তাই দলীয় আইন প্রণেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্পের সিনেটে শুরু হতে যাওয়া অভিশংসনের প্রক্রিয়া যতটা সম্ভব সংক্ষিপ্ত করে আনতে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন সিনেটে অভিশংসন আদালতের কার্যক্রম প্রক্রিয়াটি দ্রুততার সাথে শেষ হওয়ার জন্যই অপেক্ষা করছেন। এ নিয়ে নিজ দলের সিনেটরদের বাইডেন নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। করোনা ভাইরাসের মহামারী মোকাবেলা, ভ্যাকসিন সরবরাহ নিশ্চিত করা সহ নাগরিকদের জন্য ঘোষিত প্রণোদনা প্রস্তাব পাশ করানোই এখন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অগ্রাধিকারের তালিকায়।
অভিশংসন বিচারে ট্রাম্পকে দোষী করা না গেলেও ট্রাম্প যাতে ভবিষ্যতে প্রেসিডেন্ট পদ বা ফেডারেল কোন পদ পদবী গ্রহণ করতে না পারেন সে জন্য অনেকেই তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর অধীনে কিছু করা যায় কিনা তা নিয়ে পর্দার আড়ালে আলাপ আলোচনা চলছে। নেপথ্যে থেকে অনেকেই এ নিয়ে সক্রিয় হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ডেমোক্রেটদের পক্ষ থেকে এমন আলোচনা চলছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সিনেটর টম কেইন। ভার্জিনিয়া থেকে নির্বাচিত ডেমোক্রেট সিনেটর টিম কেইন বলেছেন, অভিশংসন দণ্ড নিশ্চিত না হলেও ডনাল্ড ট্রাম্প তাঁর কৃতকর্মের ফলাফল পাওয়া উচিত। স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিও বলেছেন, ক্ষমতার শেষদিকে এসে ট্রাম্পের বেপরোয়া কার্যক্রমের জন্য কোন পরিণতি ভোগ না করলে ভবিষ্যতের জন্য খারাপ নজির সৃষ্টি হবে।
ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় সপ্তাহে ট্রাম্পের অভিশংসন আদালতের কাজ সিনেটে শুরু হলেই বিষয়গুলো আরও পরিষ্কার হয়ে উঠবে। অনেকেই দেখার চেষ্টা করছেন, সিনেটে উপস্থাপিত প্রমাণাদি বা যুক্তি তর্কের পর রিপাবলিকান আইন প্রণেতাদের মধ্যে কোন নাটকীয় অবস্থানগত পরিবর্তন ঘটে কিনা । যদিও এমন সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসন দণ্ড নিয়ে সরাসরি কোন কথা বলেননি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন বিষয়টি সিনেটের স্বভাবিক প্রক্রিয়ার উপরই ছেড়ে দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন তাঁর কর্মসূচ নিয়ে দ্রুততার সাথে কাজ করাকেই অগ্রাধিকার বলে মনে করছেন বলে তাঁর ঘনিষ্টজনরাও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন। সিনেটে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করা কেবল কঠিন নয় প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে
ডেমোক্রেটদের জন্য। ট্রাম্পকে সিনেটে দন্ডিত করতে প্রয়োজন সাবেক প্রেসিডেন্টের পার্টি রিপাবলিকান সিনেটরদের ১৭টি ভোট। কিন্তু এই ভোট আর পাওয়ার কোন আশা নেই এটা বুঝে গেছেন দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ সিনেটর প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তাঁর দলের সিনেটররাও এটা ভালো করে বুঝেন। মাত্র ৫ জন সিনেটর পার্টির বিরুদ্ধে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অভিশংসনের সাহস দেখিয়েছেন সিনেটে। হাউসে ডেমোক্রেটদের সাথে ভোট দিয়েছিলেন ১০ জন কংগ্রেসম্যান। হাউসে মাইনোরিটি লিডার রিপাবলিকান কেভিন ম্যাকার্থি বা সিনেটে মাইনোরেটি লিডার রিপাবলিকান মিচ ম্যাককনেল ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা করলেও ভোটের সময় শেষ মুহূর্তে পিছুটান দেন। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত হাউস রিপাবলিকান লিডার ম্যাকার্থি ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎ করতে ওয়াশিংটন থেকে ফ্লোরিডা পামবিচে উড়ে যান। মিচ ম্যাককনেল সহ রিপাবলিকান সিনেটরদের কার্যকলাপে সিনেটে অভিশংসন বিচারের ভবিষ্যত অনিশ্চিত এটা এখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877